2.0 flim review ( ২.০ মুভির বাংলা রিভিও)










পরিচালকএস শঙ্কর
অভিনেতারজনীকান্ত,অক্ষয়কুমার,অ্যামি জ্যাকসন

আপনি যদি ঘোরতর বিজ্ঞানমনস্ক হোন, তাহলে এই সিনেমা আপনার জন্য নয়। আর যদি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে পারেন বিজ্ঞানকে, তাহলে এই ছবি থেকে আপনি পাবেন ষোলো আনা খাঁটি বিনোদন।

বিজ্ঞান প্রসঙ্গটা আগে বলে রাখি। এই ছবির বার্তা মোবাইল নেটওয়ার্কের ক্রমবর্দ্ধমান প্রতিযোগিতার ফলে ক্রমশই নাকি বাড়ছে ট্রান্সমিশন ফ্রিকোয়েন্সি। মোবাইল টাওয়ার নিঃসৃত রেডিয়েশন নাকি মেরে ফেলছে পাখিদের। এটা কতটা বিজ্ঞানসম্মত ভাবনা তার প্রমাণ কিন্তু এখনও পাওয়া যায়নি। কিন্তু, তাতে কী হয়েছে? রজনীকান্ত এবং অক্ষয়কুমার যখন বলছেন তখন বিনোদনের স্বার্থে, আসুন আমরা মেনে নিই এই বিজ্ঞান। 

ছবির এক্কেবারে শুরুতে মোবাইল টাওয়ারে একজন বৃদ্ধ মানুষকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে দেখা যায়। এই আত্মহত্যার মুহূর্তে কাছে-পিঠে থাকা হাজার-হাজার পাখি উড়ে আসে সেই মৃত দেহের কাছে। আর তার পরেই শহরের সমস্ত সেলুলার ফোন উড়ে যায় আকাশে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মন্ত্রী-সান্ত্রী প্রত্যেকের মোবাইল ফোনই ভ্যানিশ। এই রকম সময় এক বৈঠকে প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক বশীকরণ (রজনী)-এর আশঙ্কা এটা কোনও সন্ত্রাসবাদীদের কাজ নয়, বরং এর পিছনে রয়েছে অন্য এক শক্তি। আর সেই শক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য ফিরিয়ে আনা দরকার রোবট চিট্টি (রজনী)-কে। নানা রকম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বশীকরণ এবং তাঁর রোবট সঙ্গীনি নীলা (অ্যামি) বুঝতে পারে এই সব কিছুই ঘটাচ্ছে পক্ষীরাজ (অক্ষয়)। বাকিটুকু চিট্টি এবং পক্ষীরাজের মধ্যে আমরণ লড়াই। 

এই কাহিনি-রেখা পড়লে কিছুই বোঝা যাবে না। কারণ, ছবিটি কেবলমাত্র গল্প নির্ভর নয়। ছবিটির বেশির ভাগই দাঁড়িয়ে আছে দুর্দান্ত ভিজ্যুয়ালের উপর। উচ্চমানের কম্পিউটার গ্রাফিক্স হল এই ভিজ্যুয়ালের ভিত্তিভূমি। ক্যামেরা, এডিটিং এবং ছবির সাউন্ড ডিজাইন যে-কোনও আন্তর্জাতিক মানের ছবির সমতুল্য। আর এই সবকিছু দিয়েই তৈরি হয়েছে টানটান বিনোদন। চিত্রনাট্যের একেবারে শুরুতেই কাহিনি কোন পথে এগোবে সেটা নির্দিষ্ট করা আছে। এবং সেই পথ ধরেই খুব প্রেডিক্টেবলভাবে শেষ হয়েছে ছবির গল্প। এই প্রেডিক্টেবিলিটি থাকা সত্ত্বেও যে দর্শক শেষ পর্যন্ত এই ছবির বিনোদনে আপ্লুত হয়ে থাকেন, তার কারণ ছবির কাহিনির ইউনিকনেস এবং কাহিনির সাবপ্লট। এই সাবপ্লটের নায়ক হলেন পক্ষী বিশারদ এক বৈজ্ঞানিক। যে ভূমিকায় রয়েছেন অক্ষয়কুমার। পক্ষীরাজা এবং বৈজ্ঞানিক এই দুই অবতারেই অক্ষয়কুমার টেক্কা দিয়েছেন ডাবল রজনীকান্তকে। 

ছবিটির সাউন্ড এবং ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের দায়িত্বে আছেন দুই অস্কারবিজয়ী। যথাক্রমে রসুল পুকুট্টি এবং এআর রহমান। এঁরা দু’জনেই এই ছবিটির অডিয়োকে উন্নিত করেছেন আন্তর্জাতিক মানে। রজনীকান্তের অভিনয় নিয়ে বলার কিছু নেই। কারণ, তাঁকে অভিনয় করতে হয় না। তাঁর উপস্থিতিই যথেষ্ট। ৬৮ বছর বয়সেও তিনি তাঁর গোড়ালির বয়সী মেয়েদের সঙ্গে ছবিতে যেভাবে ফ্লার্ট করেন, সেটা ছবির রোবট চিট্টির থেকেও বিস্ময়কর। আর অক্ষয়কুমার যে বড় অভিনেতা তা এই ছবিতে আরও একবার প্রমাণ করলেন। 

Post a Comment

★ Don't Spam Please ★
★Any problem ? Just comment here ★